হিমেশকে প্রকাশ্যে অপমান করেন সালমান, ভেঙে যায় সম্পর্ক

হিমেশকে প্রকাশ্যে অপমান করেন সালমান, ভেঙে যায় সম্পর্ক

ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে সালমান খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে গিয়ে লাভ নেই। সালমানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মানেই তার কেরিয়ার শেষ। সালমানের হাজার বক্রোক্তি তাই মুখ বুজে সহ্য করে গিয়েছেন হিমেশ রেশমিয়া।

ইন্ডাস্ট্রিতে সালমানকে ‘গুরু’ মানতেন হিমেশ। একবার প্রকাশ্যে সেই গুরুর সঙ্গেই লড়াই বেধে যায় তার। কিন্তু কেন সালমানকে একসময় গুরু মনে করতেন হিমেশ আর কেনই বা তার মনে বিদ্বেষ তৈরি হল?

হিমেশের বাবা একজন গুজরাটি মিউজিক কম্পোজার। তবে হিমেশের কেরিয়ারে তার বাবার অবদান তেমন নেই। বলিউডে হিমেশতে সুযোগ করে দিয়েছিলেন সালমান। তারপর থেকেই সালমানকে নিজের গুরু মানতেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ফিল্ম ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’তে হিমেশকে প্রথম সুযোগ করে দেন সালমান। এই ফিল্মের দু’টো গান গেয়েছিলেন হিমেশ। দু’টো গানই সুপারহিট হয়।

হিমেশকে আরো সুযোগ দিতে শুরু করেছিলেন সালমান। নিজের ফিল্ম ‘বন্ধন’, ‘হ্যালো ব্রাদার’তেও হিমেশকে সুযোগ দেন সালমান। হিমেশের কেরিয়ারে সালমানের অবদান এতোটাই ছিলো যে তাকে ‘ঈশ্বর’ মনে করতেন হিমেশ।

এমনকি একক মিউজিক কম্পোজার হিসাবে তার প্রথম ফিল্ম ‘দুলহন হম লে যায়েঙ্গে’ও ছিলো সালমানের প্রোডাকশন। এই ফিল্ম থেকেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন নামজাদা মিউজিক কম্পোজার। এরপর ২০০৫ সালের ‘আশিক বনায়ে আপ নে’। এই ফিল্মের গান এতোটাই হিট হয় যে তরুণ প্রজন্মের কাছে হিমেশ অসম্ভব জনপ্রিয় গায়ক হয়ে ওঠেন।

কেরিয়ারের গ্রাফ সব সময় উঁচুর দিকেই যাচ্ছিলো হিমেশের। সালমানও সুপারহিট নায়ক তখন। গুরু-শিষ্যের মধ্যে সম্পর্কও দারুণ ছিলো। কিন্তু একটা ঘটনা তাদের সম্পর্কের বাঁধন আলগা করে দেয়।

২০০৬ সালে গুরু সালমানের সঙ্গে লাইভ শো করার জন্য নাগপুরে গিয়েছিলেন। হিমেশ মঞ্চে ওঠার পর দর্শকদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়। একটার পর একটা গানের অনুরোধ আসতে থাকে হিমেশের কাছে। একটার পর একটা গান গেয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সালমান যখন মঞ্চে আসেন হিমেশের মতো উত্তেজনা দর্শক দেখাননি। এটাই মনে দাগ কেটে যায় সালমানের। হিমেশের স্টারডম তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে সেটা মানা গুরুর পক্ষে সহজ ছিলো না।

এরপর সালমান তার ফিল্মে হিমেশের জন্য সুপারিশ করা বন্ধ করে দেন। ততোদিনে ইন্ডাস্ট্রিতে হিমেশ নিজের জায়গা এতোটাই পাকা করে নিয়েছিলেন যে সালমানের সুপারিশের প্রয়োজনও তার ছিলো না।

এতোদিন পর্যন্ত অবশ্য গুরু-শিষ্যের বিবাদ মিডিয়ার সামনে আসেনি। এলো এর এক বছর পর ‘সারেগামা’র মঞ্চে। ফিল্ম ‘পার্টনার’র প্রোমোশনের জন্য শোয়ে যান সালমান। বিচারকের আসনে ছিলেন হিমেশ।

সালমান নিজের ফিল্মের প্রোমোশনের কথা ভুলে সারা সময় ধরে হিমেশকে মজার ছলে অপমানই করে যাচ্ছিলেন। কখনো তার মাইক ধরার ধরন নিয়ে, কখনো তার টুপি, জামা নিয়ে তো কখনো তার কণ্ঠস্বর নিয়ে ক্রমাগত হিমেশকে বিঁধছিলেন তিনি। হিমেশ পুরো শোতে সবটাই মেনে নিচ্ছিলেন। গুরু সালমানের মুখের উপর প্রায় কিছুই বলেননি, হাসি মুখেই উত্তর দিচ্ছিলেন। এরপরই তাদের সম্পর্ক নিয়ে তুমুল চর্চা হয় মিডিয়ায়।

এর এক বছর পর ফের সালমান নিজের অন্য একটি ফিল্মের প্রোমোশনের জন্য ওই শোতে যান। সেই শোতেও হিমেশকেই টার্গেট করেন সালমান। ফের তার গান নিয়ে মজা করতে শুরু করেন। হিমেশ গান চুরি করেন, হিমেশ বাচ্চাদের জন্য গান বানান, এমনকি হিমেশের গানের সুর বলে কিছু নেই- এমনই সব মন্তব্য করে যাচ্ছিলেন তিনি। এবারেও হিমেশ হাসি মুখেই জবাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষে তিনি বিরক্ত হয়ে যান। সরাসরি সালমানকে আক্রমণ করে কিছু না বললেও তার জবাবে বিরক্তি ছিলো স্পষ্ট।

পরে এক সাক্ষাৎকারে হিমেশের থেকে জানতে চাওয়া হয় তিনি কোনো অভিনেতাকে অনুসরণ করতে চান? সকলেই মনে করেছিলেন হিমেশ প্রতি বারের মতো এবারো গুরু সালমানের নামই নেবেন। কিন্তু তেমন হয়নি। বদলে অক্ষয় কুমারের নাম নেন তিনি। সূত্র: আনন্দবাজার।

আপনি আরও পড়তে পারেন